সিলেট ১৯শে জানুয়ারি, ২০২১ খ্রিস্টাব্দ | ৫ই মাঘ, ১৪২৭ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১২:২৬ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ৮, ২০১৯
সুরমা মেইল ডেস্ক : প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় ১৯ জনকে আসামি করে থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। সোমবার (০৭ অক্টোবর) সন্ধ্যায় রাজধানীর চকবাজার থানায় ফাহাদের বাবা বরকত উল্লাহ বাদী হয়ে এ মামলা করেন।
চক বাজার থানার পুলিশ বলছে, ফাহাদ হত্যা মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে বুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেলকে। আর দুই নম্বর আসামি হলেন- বুয়েট ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মুহতাসিম ফুয়াদকে। মামলার অন্য আসামিদের মধ্যে বুয়েট ছাত্রলীগের ক্রীড়া সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অনিক সরকার ও ছাত্রলীগকর্মী বুয়েটের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র তানভীরুল আবেদীন ইথান, জিসান ও মুন্নার নাম পাওয়া গেছে।
থানায় জিডি ও তদন্ত কমিটি বুয়েট প্রশাসনের
এদিকে, আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় বুয়েট প্রশাসনের পক্ষ থেকে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) দায়ের আর তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. সাইদুর রহমানের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রোববার (০৬ অক্টোবর) দিবাগত রাতে শেরে বাংলা হলের ১০১১ নম্বর রুমের আবাসিক শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের ‘অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু’র ঘটনায় চকবাজার থানায় জিডি করা হয়েছে। জিডি’র ধারাবাহিকতায় পুলিশ এরই মধ্যে তদন্ত শুরু করেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, সংঘটিত অনাকাঙ্ক্ষিত ও দুঃখজনক ঘটনা বিষয়ে সোমবার সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভিন্ন বিভাগের প্রধান, পরিচালক, প্রাধ্যক্ষ, রেজিস্ট্রার ও সিনিয়র শিক্ষকদের নিয়ে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের সিনিয়র শিক্ষকদের সমন্বয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
আবরার হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীকে তদন্ত কার্যক্রমে সহযোগিতা করার অনুরোধ জানানো হয় বিজ্ঞপ্তিতে।
ছাত্রলীগের স্বীকারোক্তি
বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি খন্দকার জামিউশ সানি স্বীকার করেছেন, বুয়েট ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এতে জড়িত রয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়ও জানিয়েছেন, এ ঘটনা ‘তদন্ত’ করতে কমিটি গঠন করেছে ছাত্রলীগ। তিনি বলেন, আবরার হত্যায় ছাত্রলীগের কেউ বিন্দুমাত্র জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বুয়েট ছাত্রলীগের ১১ নেতা বহিষ্কার
ওদিকে, আবরার ফাহাদকে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগ থেকে ১১ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। সোমবার কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীরা হলেন- বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদি হাসান রাসেল, যুগ্ম-সম্পাদক মুহতাসিম ফুয়াদ, সাংগাঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান রবিন, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অনিক সরকার, ক্রীড়া সম্পাদক সেফায়েতুল ইসলাম জিওন, সাহিত্য বিষয়ক সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনির, উপ-সমাজসেবা সম্পাদক ইফতি মোশাররফ সকাল, উপদফতর সম্পাদক মুজতবা রাফিদ, ছাত্রলীগ সদস্য মুনতাসির আল জেমি, মুজাহিদুর রহমান ও এহতেমামুল রহমান রাব্বি।
এ বিষয়ে ছাত্রলীগের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) আল-নাহিয়ান খান বলেন, ‘আমরা যে তদন্ত কমিটি গঠন করেছি, সেই তদন্ত কমিটি প্রাথমিকভাবে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে ১১ জনের জড়িত থাকার প্রমাণ পেয়েছে। তাদের সাংগঠনিকভাবে ছাত্রলীগ থেকে তাদের স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। পরবর্তীতে তদন্তে এ ঘটনার সাথে কারো সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়, তাদের বিরুদ্ধেও সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কেউ যদি ব্যক্তিগতভাবে কোনো অপরাধ করে থাকে তার দায়ভার সংগঠন তথা বাংলাদেশ ছাত্রলীগ নেবে না।’
একইসঙ্গে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন ছাত্রলীগ সভাপতি।
৯ ছাত্রলীগ নেতা আটক
আবরারকে হত্যার ঘটনায় এ পর্যন্ত বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের ৯ নেতাকে আটক করেছে পুলিশ। তারা হলেন- বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফুয়াদ, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এবং মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী অনিক সরকার, ক্রীড়া সম্পাদক ও নেভাল আর্কিটেকচার অ্যান্ড মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের একই বর্ষের মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন এবং ছাত্রলীগ নেতা রবিন, মুন্না, তানভীরুল আরেফিন ইথান, অমিত সাহা ও আল জামি।
নিহত বুয়েট ছাত্র আবরার ফাহাদ (ছবি : সংগৃহীত)
সোমবার ভোর ৪টার দিকে বুয়েটের শেরে বাংলা হলের সিঁড়ির নিচ থেকে আবরারের নিথর দেহ উদ্ধার করেন শিক্ষার্থীরা। বুয়েটের তড়িৎকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরার থাকতেন শেরে বাংলা হলের ১০১১ নম্বর রুমে। হলের শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, রোববার (০৬ অক্টোবর) রাতে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আবরারকে ২০১১ নম্বর রুমে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছেন।
এ ঘটনায় সারাদিন বিক্ষুব্ধ ছিল বুয়েট ক্যাম্পাস। সহপাঠীকে হত্যার বিচারের দাবিতে দিনভর বিক্ষোভ করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। সন্ধ্যায় ঢাকা মহানগর পুলিশের দুই অতিরিক্ত কমিশনার ক্যাম্পাসে গেলে আবরার হত্যার ঘটনার সংশ্লিষ্ট সিসিটিভি ফুটেজের দাবিতে শিক্ষার্থীরা তাদের দুই ঘণ্টারও বেশি সময় অবরুদ্ধ করে রাখেন। পরে শিক্ষার্থীদের কাছে ফুটেজ হস্তান্তর করে তবেই ছাড়া পান পুলিশের দুই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।
প্রধান উপদেষ্টা বীজিত চৌধুরী
উপদেষ্টা মো: ফয়েজ আহমদ (দৌলত)
উপদেষ্টা খালেদুল ইসলাম কোহিনুর
উপদেষ্টা মো: মুজিবুর রহমান (ডালিম)
আইন বিষয়ক উপদেষ্টা : এড. মো: রফিক আহমদ
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি : মোহাম্মদ হানিফ
সম্পাদক ও প্রকাশক : বীথি রানী কর
নির্বাহী সম্পাদক : ফয়সাল আহমদ
নিউজ ইনচার্জ : সুনির্মল সেন
অফিস : রংমহল টাওয়ার (৪র্থ তলা),
বন্দর বাজার, সিলেট।
মোবাইল : ০১৭১৬-৯৭০৬৯৮
E-mail: surmamail1@gmail.com
Copyright-2015
Design and developed by ওয়েব হোম বিডি