সিলেট ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১২:৩৬ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ২৯, ২০১৯
সুরমা মেইল ডেস্ক : ফেনীর সোনাগাজীতে মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির জবানবন্দির ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়ানোর অভিযোগে ওই থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোয়াজ্জেম হোসেনকে আট বছরের কারাদণ্ড ও ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছে ঢাকার সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনাল। জরিমানার এই টাকা নুসরাতের পরিবারকে দিতে বলেছে আদালত।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৬ ধারায় ওসি মোয়াজ্জেমকে ৫ বছরের কারাদণ্ড ও ৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। একই আইনের ২৯ ধারায় আসামি আরও তিন বছরের কারাদণ্ড ও ৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেন ট্রাইব্যুনাল। জরিমানার টাকা নুসরাতের পরিবারকে দেওয়ার আদেশ দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি জরিমানার টাকা অনাদায়ী থাকলে আসামিকে আরও ছয়মাসের কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।
ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৬, ২৯ ও ৩১ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছিল। এর মধ্যে আসামির বিরুদ্ধে ৩১ ধারায় আনা অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি।
বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) দুপুরে বাংলাদেশ সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন আসামির উপস্থতিতে এ রায় ঘোষণা করেন।
রায় ঘোষণার পর এক প্রতিক্রিয়ায় ওসি মোয়াজ্জেমের আইনজীবী ফারুক আহমেদ বলেন, ‘সজল নামে একজন সাংবাদিকের কাছেই এই ভিডিওটি গিয়েছিল। আমরা আদালতকে বলেছি, আমাদের ভিডিওটি মিসিং হয়েছে। এটি সজল ছাড়া অন্য কোনো ডিভাইসে যায়নি এটি এক্সপার্ট রিপোর্ট। ওই ভিডিওটি আসামির মোবাইল থেকে ফেসবুক কিংবা ইউটিউবে পাবলিকলি শেয়ার হয়নি। সুতরাং আসামির কোনো দোষ নেই।’
মোয়াজ্জেমের আইনজীবী আরও বলেন, ‘মামলার তিনটি ধারার মধ্যে একটি ধারায় আনীত অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি। এক্ষেত্রে আমরা আংশিক সফল। আমরা অবশ্যই উচ্চ আদালতে যাব। আদালত আবেগের বশে আজকের এই রায় দিয়েছেন।’
এদিকে, মামলার বাদি ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন বলেছেন, ‘সোনাগাজী থানার তৎকালীন ওসি অন্যায়ভাবে নুসরাতের ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার অপরাধে আদালত তাকে আট বছরের সাজা দিয়েছেন এবং ১০ লাখ টাকা জরিমানা করেছেন। প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ, কারণ নুসরাত নিহত হওয়ার ঘটনায় তিনি আমাদের সাহস দিয়েছিলেন। যার ফলে সফলতার সঙ্গে আমরা মামলাটি শেষ করতে পেরেছি। তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) ধন্যবাদ, তাদের সুন্দর একটি তদন্তের জন্য আমরা ন্যয়বিচার পেয়েছি।’
সুমন বলেন, ‘সারাদেশে পুলিশ স্টেশনগুলোকে যেসব ওসি জমিদার বাড়ি মনে করেন এবং যেসব ওসিদের আচরণও জমিদারের মতো এ রায় তাদের জন্য অশনি সংকেত। এ রায়ের মধ্য দিয়ে প্রমাণ হলো পুলিশের বিরুদ্ধে বিচার পাওয়া সম্ভব। যারা পুলিশের পোশাক পড়ে দম্ভোক্তি করে এবং ক্ষমতা দেখায় তাদের জন্য এই রায় আতঙ্ক হয়ে থাকবে।’
অন্যদিক, রায়ে সন্তুষ্ট বলে জানিয়েছেন নুসরাতের ভাই রাসেদুল হাসান রায়হান। তিনি বলেন, ‘এই রায়ে সন্তুষ্ট হয়েছি। এতে নুসরাতের আত্মা একটু হলেও শান্তি পাবে। প্রত্যাশিত রায়ই হয়েছে।’
চলতি বছরের গত ১৫ এপ্রিল মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালে মামলার আবেদন করেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। এ আবেদন গ্রহণ করে ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামলাটি তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দেন।
এর আগে, সোনাগাজীর ইসলামিয়া মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ দিতে থানায় গিয়েছিলেন নুসরাত। সে সময় ওসি মোয়াজ্জেম তার অভিযোগ গ্রহণ না করে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন। ওই জিজ্ঞাসাবাদের ভিডিও ধারণ করে অনলাইনে ছড়িয়েও দেন ওসি মোয়াজ্জেম।
গত ২৭ মার্চ নুসরাত জাহান রাফিকে নিজরুমে ডেকে নিয়ে শ্লীলতাহানির অভিযোগে সোনাগাজী ইসলামিয়া মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলাকে আটক করে পুলিশ। কারাগারে থেকেই নুসরাতের পরিবারকে মামলা তুলে নিতে চাপ দিতে থাকেন সিরাজ। তবে মামলা তুলে না নিলে নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন অধ্যক্ষের সহযোগীরা। এরপর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১০ এপ্রিল রাতে নুসরাতের মৃত্যু হয়।
নুসরাত হত্যা মামলায় গত ২৪ অক্টোবর ১৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেন ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশীদ।
উপদেষ্টা খালেদুল ইসলাম কোহিনুর
আইন বিষয়ক উপদেষ্টাঃ এড. মোঃ রফিক আহমদ
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি : মোহাম্মদ হানিফ
সম্পাদক ও প্রকাশক : বীথি রানী কর
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : ফয়সাল আহমদ
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : মো: কামরুল হাসান
নিউজ ইনচার্জ : সুনির্মল সেন
অফিস : রংমহল টাওয়ার (৪র্থ তলা),
বন্দর বাজার, সিলেট।
মোবাইল : ০১৭১৬-৯৭০৬৯৮
E-mail: surmamail1@gmail.com
Copyright-2015
Design and developed by ওয়েব হোম বিডি