কানাইঘাট পৌর নির্বাচন: লড়াই হবে চতুর্থমুখী, শেষ মূহুর্তে ব্যাপক প্রচারণা

প্রকাশিত: ৯:৩২ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২১

কানাইঘাট পৌর নির্বাচন: লড়াই হবে চতুর্থমুখী, শেষ মূহুর্তে ব্যাপক প্রচারণা

মুমিন রশিদ, কানাইঘাট : সিলেটের কানাইঘাট পৌরসভার ৪র্থ ধাপের আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনকে ঘিরে শেষ মূহুর্তে জমে উঠেছে প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণা। নির্বাচনের বাকি আর মাত্র দু’দিন। এ পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও ২ স্বতন্ত্র প্রার্থীর মধ্যে চতুর্থ মুখী ভোটের লড়াই হবে বলে সাধারণ ভোটাররা এমন অভিমত ব্যক্ত করেছেন। দলের পাশাপাশি আঞ্চলিকতার টানে ভোটের লড়াইয়ে মেয়র প্রার্থীদের জয়-পরাজয় নির্ধারণ হবে বলে অনেকেই মনে করেন।

 

নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে প্রার্থীদের প্রচারনায় মুখরিত হয়ে উঠেছে গোটা পৌর এলাকা। মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা তাদের সমর্থকদের নিয়ে শেষ পর্যায়ে ব্যাপক প্রচারণা ও পথ সভা, উঠান বৈঠক, গণসংযোগ পুরোদমে চালিয়ে যাচ্ছেন। সর্বত্র ভোট নিয়ে পৌরবাসীর মধ্যে চলছে ব্যাপক আলোচনা।

 

নির্বাচনে মেয়র পদে ৬ জন ও ৯টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ৩৯ জন এবং সংরক্ষিত ৩টি ওয়ার্ড থেকে ৯ জন মহিলা প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন।

 

উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, কানাইঘাট পৌরসভায় মোট ভোটারের সংখ্যা হচ্ছে ১৯ হাজার ৪২৭জন। তার মধ্যে পুরুষ ভোটার হচ্ছেন ৯ হাজার ৮৮০ এবং মহিলা ভোটার হচ্ছেন ৯ হাজার ৫৪৭ জন।

 

মেয়র পদে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী উপজেলা আ.লীগের সভাপতি সাবেক মেয়র লুৎফুর রহমান (নৌকা), বিএনপি মনোনীত প্রার্থী পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর হাজী শরীফুল হক (ধানের শীষ) প্রার্থীর পাশাপাশি স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান মেয়র উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন (নারিকেল গাছ)। অপর দুই স্বতন্ত্র প্রার্থী ব্যবসায়ী সোহেল আমিন (জগ), কুয়েত প্রবাসী জামায়াত ঘরনার প্রার্থী কাওছার আহমদ (মোবাইল ফোন) ও ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী হাফিজ নজির আহমদ (হাতপাখা) নিয়ে লড়ছেন।

 

আওয়ামী লীগের প্রার্থী লুৎফুর রহমানের পক্ষে সিলেট জেলা, উপজেলা ও পৌর আওয়ামী লীগের কর্মীরা মরিয়া হয়ে প্রতিদিন প্রচারণা চালাচ্ছেন। বিএনিপি সমর্থিত প্রার্থী শরীফুল হকের পক্ষে ঐক্যবদ্ধ ভাবে দলের নেতাকর্মীদের প্রচরাণা করতে দেখা গেছে। পাশাপাশি স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থীরা প্রচারনায় পিছিয়ে নেই।

 

তবে, আওয়ামী লীগের তৃণমূলের অনেক নেতাকর্মীদের স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী সোহেল আমিন ও বর্তমান মেয়র স্বতন্ত্র প্রার্থী নিজাম উদ্দিনের পক্ষে কাজ করতে দেখা গেছে। নানা সমিকরনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থীর পাশাপাশি স্বতন্ত্র প্রার্থী বিজয়ী হয়ে চমক দেখাতে পারেন। নির্বাচনে দলের বাহিরে এলাকা ও আঞ্চলিকতার টান ভোটের মাঠে পরিলক্ষিত হচ্ছে।

 

ইতিমধ্যে নির্বাচনকে অবাধ সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভাবে সম্পন্ন করতে সিলেটের নির্বাচন অফিসার ও রিটার্নিং কর্মকর্তা ফয়সাল কাদির মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের নিয়ে মতবিনিময় করেছেন।

 

সিলেট পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন পিপিএম সকল ভোট কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন। নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা সরকারি কর্মকর্তা ও আইন-শৃংখলার বাহিনীর কর্মকর্তারা অবাধ সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ন ভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করতে সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহন করেছেন। তারা ভোটারদের নির্ভয়ে ভোট কেন্দ্র উপস্থিত হয়ে তাদের পছন্দের প্রার্থীদের ভোট দেওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন।

 

নির্বাচনে বিজয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদি আওয়াম ীলীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী লুৎফুর রহমান। তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের উন্নয়ন মূলক কর্মকান্ডের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পৌরবাসী তাকে সমর্থন জানাচ্ছেন এবং তার প্রতীক নৌকাকে বিজয়ী করবেন।

 

বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী শরীফুল হক জানান, তিনি যেদিকে যাচ্ছেন ব্যাপক সমর্থন পাচ্ছেন। নির্বাচন সুষ্টু হলে নিরব ভোট বিপ্লবের মাধ্যমের তিনি বিজয়ী হবেন।

 

অপরদিকে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র নিজাম উদ্দিন বলেন, বিগত ৫ বছরে পৌরসভায় যে সমস্ত উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড হয়েছে তা বিগত ২৫ বছরেও হয়নি। উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড নিয়ে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী লুৎফুর রহমান মিথ্যাচার করে ভোটারদের বিভ্রান্ত করছেন। পৌরসভার উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে সর্বস্তরের ভোটাররা তাকে অকুণ্ঠ সমর্থন দিচ্ছেন তার বিজয় কেউ টেকাতে পারবে না।

 

অপর স্বতন্ত্র প্রার্থী সোহেল আমিন বলেন, পৌরসভার ভোটাররা এখন অনেক সচেতন। স্থানীয় সরকারের এ নির্বাচনে তারা নিরপেক্ষ ও স্বতন্ত্র প্রার্থীকে দলমতের উর্ধ্বে উঠে ভোট দিবেন। পৌরসভার সর্বত্র তার প্রতি জগের পক্ষে গনজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। সেই জুয়ার অপপ্রচার করে এলাকার মানুষকে কেউ বিভ্রান্ত করতে পারবেন না। নির্বাচন সুষ্ঠু হলে জনগনের ভোটে তিনি বিপুল ভোটে বিজয়ী হবেন।

 

আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী কুয়েত প্রবাসী কাওছার আহমদ বলেছেন, তার প্রতি মোবাইল ফোনকে দল মতের উর্ধ্বে উঠে সবাই সমর্থন জানাচ্ছেন। বিজয়ের ব্যাপারে তিনি বেশ আশাবাদী। তবে নির্বাচনকে সামনে রেখে এখনো পর্যন্ত কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। প্রতিদিন পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে।

 

থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ তাজুল ইসলাম পিপিএম বলেন, পৌরসভার নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও উৎসব মুখর করতে এবং নির্বাচন নিয়ে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকরা যাতে করে কোন ধরনের আইনশৃংখলা পরিপন্থি কর্মকান্ড করতে না পারে এ জন্য পৌর এলাকায় পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে।

 

সংবাদটি শেয়ার করুন
  •  

লাইক দিয়ে পাশে থাকুন

রাফি গার্ডেন সুপার হোস্টেল।

 

আমাদের ভিজিটর
Flag Counter

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com