ঠাকুরগাঁওয়ে পরীক্ষা মূলকভাবে বেগুনী গাছের ধানের চাষ

প্রকাশিত: ৩:৩২ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১১, ২০১৯

ঠাকুরগাঁওয়ে পরীক্ষা মূলকভাবে বেগুনী গাছের ধানের চাষ

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার চামেশ্বরী এলাকায় পরীক্ষা মূলকভাবে বেগুনী গাছের ধানের চাষ করে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন একজন অবসরপ্রাপ্ত চিকিৎসক। চারদিকে বিস্তৃত সবুজ ধান ক্ষেতের মধ্যে বেগুনী গাছের ধান গাছ দেখে অনেকে জনতে চান ধানের এমন হাল হলো কি করে?

সবুজ ধানের বেষ্টনীর মধ্যে বেগুনী এ ধানক্ষেতটি প্রথমে দেখায় যে কারও কাছে মনে হতে পারে, কোন কারণে ফসল নষ্ট হয়েছে, অথবা আগাছানাশক দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ধান ক্ষেত হয়েছে। কিন্তু উত্তরে আসে ধান ক্ষেত নষ্ট হয়নি, আগাছানাশক দিয়েও ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। আসলে ধানগাছের রংই বেগুনী। অন্য ধান গাছের চেয়ে এই ধান গাছ দেখতে আলাদা হওয়ায় এক পলক দেখার জন্য প্রতিদিন সাধারণ মানুষেরা ভিড় জমাচ্ছেন ওই ধান ক্ষেতে।

কৃষি বিভাগ সূত্রে জানাযায়, নতুন চাষ শুরু হওয়া এ ধানের নাম ‘পার্পল লিফ রাইস’। দেশে সর্বপ্রথম এ জাতের ধানের আবাদ শুরু হয়েছিল গাইবান্ধায়। সৌন্দর্য ও পুষ্টিগুণে ভরপুর এ ধান। ধানের গায়ের রং সোনালি ও চালের রং বেগুনি। উফশী জাতের এ ধানে রোগবালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণ অনেকটাই কম হয়। রোপণ থেকে ধান পাকতে সময় লাগে ১৪৫-১৫৫ দিন। অন্য জাতের ধানের চেয়ে এ ধানের গোছা প্রতি কুশির পরিমান বেশি থাকায় একর প্রতি ফলনও বেশ ভালো। একর প্রতি ফলন ৫৫ থেকে ৬০ মণ হয়ে থাকে। অন্য সব ধানের তুলনায় এ ধান মোটা, তবে পুষ্টিগুণ অনেক। এ চালের ভাত খেতেও সুস্বাদু।

ঠাকুরগাঁওয়ে বেগুনী ধানের প্রথম চাষি সাবেক সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা চিকিৎসক শহিদুল ইসলাম বলেন, দিনাজপুরের নবাগঞ্জ উপজেলার একজন ঔষধ প্রতিনিধির মাধ্যমে ওই ধানের বিষয়ে জানতে পারি। পরে তার থেকে ২ হাজার টাকা দিয়ে ১ কেজি ধান সংগ্রহ করে আমন মৌসুমে ৬ শতক জমিতে পরীক্ষা মূলক ভাবে চাষ করেছি। শুনেছি এই ধান বোরো মৌসুমে ভাল হয় তাই ওই জমি থেকে যে পরিমাণ ধান পাবো সব টুকু দিয়ে বংশ বৃদ্ধি করবো। নতুন এই ধান দেখতে প্রতিদিন মানুষ ভিড় করছেন। অনেক কৃষক এই ধান চাষ করতে বীজ চেয়েছে। ভাল ফলাফল পেলে আগামীতে অন্য চাষিদের মাধ্যমে ছড়িয়ে দিব।

বড়গাঁও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রভাত কুমার সিং বলেন, চিকিৎসক শহিদুল ইসলাম পরীক্ষা মূলক এ ধান চাষ করেছেন। ধান ক্ষেতটি নিজে নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করছি। গাছের আকার-আকৃতি বেশ ভালো দেখা যাচ্ছে। আশা করছি, অন্যান্য ধানের তুলনায় ফলন ভালো হবে। সেই সাথে আগামীতে আশপাশের এলাকায় ওই ধানের চাষ বৃদ্ধি পাবে।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃẲ রায় বলেন, ‘বেগুনি রঙের এই ধান বিদেশি নয়। এটা আমাদের দেশি জাতের ধান। আগে অন্যান্য জেলায় চাষ হয়েছে, এবার ঠাকুরগাঁওয়ে প্রথম চাষ হচ্ছে। একজন চাষি পরীক্ষামূলক ভাবে চাষ করেছেন। ফলন ভালো হলে উৎপাদিত ধানগুলো বীজ আকারে রাখা হবে। ধানক্ষেতটি নিয়মিত পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। এখন এর ফলন কী রকম হবে, তা জানতে ধান কাটা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। তবে এই ধান বোরো মৌসুমের জাত।

সংবাদটি শেয়ার করুন
  •  

লাইক দিয়ে পাশে থাকুন

রাফি গার্ডেন সুপার হোস্টেল।

 

আমাদের ভিজিটর
Flag Counter

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com