সিলেট ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১২:৪৬ অপরাহ্ণ, আগস্ট ৬, ২০২০
আন্তর্জাতিক ডেস্ক ,
লেবাননের রাজধানী বৈরুতের সমুদ্রবন্দর এলাকায় মঙ্গলবারের ভয়াবহ বিস্ফোরণে পুরো এলাকা ধ্বংস্তূপে পরিণত হয়েছে। এতে বুধবার পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা অন্তত ১২৮ জন। গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে চার হাজারের বেশি মানুষকে। এখনও কয়েকশ’ মানুষ নিখোঁজ রয়েছে বলে জানিয়েছে ভুক্তভোগী বহু পরিবার। ধ্বংস্তূপে প্রাণের খোঁজে ফরেনসিক টিম নামিয়েছে লেবানিজ রেডক্রস।
বুধবার এক বিবৃতিতে সংস্থাটির কর্মকর্তারা বলেছেন, আমাদের টিম এখনও উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রেখেছে। লেবাননের কর্মকর্তারা বলছেন, বিস্ফোরণস্থলের ধ্বংসস্তূপ সরাতে এখনও কাজ করছেন উদ্ধারকর্মীরা। ফলে হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
মঙ্গলবার রাজধানী বৈরুতের বন্দর এলাকায় জোড়া বিস্ফোরণ ঘটে। স্থানীয় সময় বিকাল ৬টার পর পর ওই বিস্ফোরণে বৈরুত ছাড়াও আশপাশের অনেক শহর কেঁপে ওঠে। বিস্ফোরণের তীব্রতা ছড়ায় বহুদূর পর্যন্ত। কয়েক কিলোমিটার দূর পর্যন্ত ঘরবাড়ির কাচ ভেঙে যায়। দেয়াল ও বড় প্রাচীরগুলো উড়ে যায়। কম্পন অনুভূত হয় ২৪০ কিলোমিটার দূরের দ্বীপরাষ্ট্র সাইপ্রাসেও, সেখানকার বাসিন্দারা এ ঘটনাকে ভূমিকম্প বলে মনে করেছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শীর বরাতে রয়টার্স জানিয়েছে, বিস্ফোরণে পুরো বৈরুত শহর ভূমিকম্পের মতো কেঁপে ওঠে। ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়া বিভিন্ন ভিডিওতে দেখা যায়, বৈরুতের বন্দর এলাকা থেকে বড় গম্বুজ আকারে ধোঁয়া উড়ছে। এর কিছুক্ষণের মধ্যে বিকট বিস্ফোরণে গাড়ি ও স্থাপনা উড়ে যেতে দেখা যায়।
প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, বন্দরের এক বিস্ফোরক দ্রব্যের গুদামে মঙ্গলবারের ওই বিস্ফোরণের সূত্রপাত। বিস্ফোরণের পর পরই বৈরুত যেন এক ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। এদিকে সেদিকে পড়ে আছে ভাঙা কাচ। ভবনগুলো আগুনে পুড়ে গেছে। বিস্ফোরণের মূল এলাকা থেকে ৪ কিলোমিটার দূরে থাকা ভবনগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ বিস্ফোরণকে কেউ কেউ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষে জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকির বোমা বিস্ফোরণের সঙ্গেও তুলনা করছেন। যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক সংস্থা বলছে, বিস্ফোরণের তীব্রতা ছিল ৩ দশমিক ৩ মাত্রার ভূমিকম্পের সমান।
বিস্ফোরণস্থলের কাছেই ২০০৫ সালে এক গাড়ি বোমা হামলায় লেবাননের সাবেক প্রধানমন্ত্রী রফিক হারিরি নিহত হয়েছিলেন। শুক্রবার নেদারল্যান্ডসে জাতিসংঘের এক বিশেষ ট্রাইব্যুনালে দেড় দশক আগের ওই হত্যাকাণ্ড নিয়ে রায় হওয়ার কথা। অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত লেবানন এমনিতেই পুরনো গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে ও নতুন করোনা সংকট সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে। ইরান সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর সঙ্গে ইসরাইলের সাম্প্রতিক মুখোমুখি অবস্থানের কারণেও দেশটি নাজুক অবস্থানে আছে।
বিস্ফোরণের পর ঘটনাস্থলে অসংখ্য মৃতদেহ ও ধ্বংস্তূপে দেখার কথা জানিয়েছেন বিবিসির এক সাংবাদিক। হাসপাতালগুলোতে ছিল আহত ও রক্তাক্তদের উপচে পড়া ভিড়। স্থানীয় গণমাধ্যমের ছবিতে ধ্বংস্তূপের নিচে বহু মানুষকে আটকে পড়া অবস্থায় দেখা যায়।
এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, বিস্ফোরণের শব্দে তার কানে তালা লেগে গিয়েছিল। ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, বৈরুতের বন্দর এলাকা থেকে বড় গম্বুজ আকারে ধোঁয়া উড়ছে। এর কিছুক্ষণের মধ্যে বিকট বিস্ফোরণে গাড়ি, ভবন উড়ে যেতে দেখা যায়। বিস্ফোরণের ধাক্কায় বাড়িঘরের জানালার কাচ ও বেলকনি ভেঙেও অনেকে আহত হন। লেবাননের প্রধানমন্ত্রী হাসান দিয়াব এ ঘটনাকে বিপর্যয় হিসেবে বর্ণনা করে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার হুশিয়ারি দিয়েছেন।
বিস্ফোরণের পরপরই শুরু হয় উদ্ধার অভিযান। চারদিকে সারি সারি মরদেহ। দিশেহারা রক্তাক্ত মানুষ। হাসপাতালে জায়গা হচ্ছে না আহতদের। বিলাসবহুল হোটেল, আবাসিক ভবন সব কিছু পরিণত হয়েছে অচেনা ধ্বংসস্তূপে। আহতদের চিৎকার আর নিখোঁজের স্বজনদের দীর্ঘশ্বাসে ভারি হয়ে ওঠে আকাশ। চিকিৎসা নিতে আশপাশের হাসপাতালগুলোতে নেয়া হয়েছে কয়েক হাজার আহতকে। বিস্ফোরণে হাসপাতালগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এমন অবস্থায় চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছে তারা। বিস্ফোরণের এই ধ্বংসলীলার মধ্যে তিনদিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে লেবাননের সরকার।
সাইপ্রাস থেকে বেশ কয়েকজন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারী টুইটারে জানিয়েছেন, তারা নিজেদের বাসভবনে বিস্ফোরণের প্রভাব অনুভব করেছেন। ইলিয়াস ম্যাভরোকফ্যালোস টুইটারে লিখেছেন, ‘সাইপ্রাসের লিমাসোলে বিস্ফোরণের প্রভাব অনুভূত হয়েছে। আমাদের (ভবনের) জানালা কেঁপে উঠেছিল।’
লিমাসোলের আরেক বাসিন্দা টুইট করেছেন, ‘আমি তো খোঁজা শুরু করেছিলাম যে আমাদের এখানে বোমা হামলা হল কিনা।’ আরেক টুইটার ব্যবহারকারী জানিয়েছেন, সাইপ্রাসের নিকোসিয়া শহরেও বিস্ফোরণের আওয়াজ শোনা গেছে এবং ‘মৃদু কম্পন’ অনুভূত হয়েছে। সাইপ্রাসের পররাষ্ট্রমন্ত্রী নাইকোস ক্রিস্টোদুলাইদেস টুইট বার্তায় জানিয়েছেন, তিনি লেবানন সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন এবং লেবাননকে যে কোনো সহায়তার জন্য সাইপ্রাস প্রস্তুত রয়েছে বলে জানান।
উপদেষ্টা খালেদুল ইসলাম কোহিনুর
আইন বিষয়ক উপদেষ্টাঃ এড. মোঃ রফিক আহমদ
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি : মোহাম্মদ হানিফ
সম্পাদক ও প্রকাশক : বীথি রানী কর
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : ফয়সাল আহমদ
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : মো: কামরুল হাসান
নিউজ ইনচার্জ : সুনির্মল সেন
অফিস : রংমহল টাওয়ার (৪র্থ তলা),
বন্দর বাজার, সিলেট।
মোবাইল : ০১৭১৬-৯৭০৬৯৮
E-mail: surmamail1@gmail.com
Copyright-2015
Design and developed by ওয়েব হোম বিডি