সিলেট ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১১:৩২ অপরাহ্ণ, জুন ১২, ২০২২
সুরমা মেইল ডেস্ক :
দীঘির শহর খ্যাত সিলেট থেকে হারিয়ে যাচ্ছে দীঘি। এক সময় সিলেট নগরে অসংখ্য দীঘি থাকলেও এখন আর চোখে পড়ে না। ভূমিখেকো চক্রের কারণে ধীরে ধীরে দীঘিশূন্য হয়ে পড়ছে সিলেট। দখল-ভরাট আর দূষণে হারিয়ে গেছে অনেক দীঘি। অথচ দীঘিগুলোর নামেই পরিচিত নগরীর বিভিন্ন পাড়া মহল্লা।
হারিয়ে যাওয়ার তালিকায় ছিল নগরীর প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত ধোপাদীঘিও। এটি সিলেটের প্রাচীনতম একটি দীঘি। দূষণ আর দখলদারের ছোবলে দীঘিটি অনেকটাই বেদখলে ছিল। তবে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের (সিসিক) উদ্যোগে প্রাণ ফিরে পেয়েছে ধোপাদীঘি।
ভরাট হয়ে যাওয়া দীঘিটি খনন করে এর চারপাশে করা হয়েছে দৃষ্টিনন্দন ‘ওয়াকওয়ে’। বিশালায়তনের দীঘির দুই পাশে নির্মাণ করা হয়েছে দৃষ্টিনন্দন পুকুরঘাট। রাখা হয়েছে বসার স্থান ও শৌচাগার। পুরোনো জীর্ণতাকে বিদায় দিয়ে নতুন রূপে সাজানো হয়েছে দীঘির চারপাশ। আলোকসজ্জা করা হয়েছে দীঘির চারপাশের ওয়াকওয়েতে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ৬ একর আয়তনের ধোপাদীঘি সিলেটের অন্যতম প্রাচীন দীঘি। ঐ দীঘির নামেই এ এলাকার নামকরণ হয়েছে ধোপাদীঘির পাড়। দীঘির ৫ একর জায়গার মালিক সিলেট সিটি কর্পোরেশন। বাকি এক একর ধোপাদের মালিকানায়। অনেকদিন ধরেই দখলে-দূষণে বিপন্ন হয়ে পড়েছিল ধোপাদীঘির বেশিরভাগ অংশ। সিটি কর্পোরেশনই শিশুপার্কের জন্য এ দীঘির একটি অংশ ইজারা দেয়। দীঘি দখল করে গড়ে ওঠে ব্যক্তি মালিকানায় পরিচালিত শিশুপার্ক। দীঘি ভরাট করে মসজিদও নির্মাণ করে সিটি কর্পোরেশন।
এছাড়া এ দীঘির তীর দখল করে গড়ে উঠেছে মাইক্রোবাস স্ট্যান্ড ও রেড ক্রিসেন্টের কার্যালয়। চারপাশে নানা স্থাপনার কারণে এ দীঘি প্রায় আড়ালেই পড়ে ছিল। এ অবস্থায় ২০১৮ সালে সিসিকের অভিযানে কয়েকটি স্থাপনা উচ্ছেদের পর দীঘিটির একপাশ দৃশ্যমান হয়। উচ্ছেদকৃত ঐ এলাকায় প্রথমে নিজেরাই স্থাপনা নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সিটি কর্পোরেশন।
সিসিক সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালে বেদখল হওয়া ধোপাদীঘি উদ্ধার করে দৃষ্টিনন্দন স্থাপনাসহ দীঘির মাঝখানে রেস্টুরেন্ট নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সিটি কর্পোরেশন। আর্থিক অনুদানে উৎসাহ দেখায় ভারত। ফলে ধোপাদীঘিকে ঘিরে শুরু হয় নতুন পরিকল্পনা। এ সময় সিলেটের পরিবেশবাদীরা মূল দীঘির আয়তন সংকুচিত করে স্থাপনা নির্মাণ এবং দীঘির মাঝখানে রেস্টুরেন্ট নির্মাণের বিরোধিতা করে। একটি পর্যায়ে রেস্টুরেন্ট নির্মাণের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে সিটি কর্পোরেশন।
ধোপাদীঘির পাড়ের সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য গ্রহণ করা হয় ‘ধোপাদীঘি এরিয়া ফর বেটার এনভায়মেন্ট অ্যান্ড বিউটিফিকেশন’ প্রকল্প। প্রকল্প বাস্তবায়নে কাজ করে ‘ডালি কনস্ট্রাকশন’ নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এরই মধ্যে শতভাগ কাজ শেষ করেছে প্রতিষ্ঠানটি। দীঘির চারদিকে নির্মাণ করা হয়েছে ওয়াকওয়ে। দর্শনার্থীদের বসার জন্য স্থাপন করা হয়েছে বেঞ্চ। পুকুরে নামার জন্য বসানো হয়েছে দৃষ্টিনন্দন ঘাট। পুকুরের নোংরা পানি পরিষ্কার করার কাজও চলছে।
বৃক্ষপ্রেমীদের পরামর্শে সবুজ বৃক্ষ লাগানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ওয়াকওয়ে ঘেঁষে নির্মাণ করা হয়েছে শৌচাগার। পুকুরপাড়ে সিটি কর্পোরেশন নির্মিত মসজিদের উত্তর পাশে রাখা হয়েছে প্রবেশপথ। লোকজনের হাঁটাচলার জন্য নিরাপদ স্থান হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে ওয়াকওয়েটি। দীঘির চারদিকের ওয়াকওয়েতে রয়েছে আলোকসজ্জা। সবমিলিয়ে ধোপাদীঘির পাড় পেয়েছে নান্দনিক রূপ।
সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান বলেন, পরিবেশবাদীদের দাবি ছিল আমরা রেস্টুরেন্ট করব না। আমরা সেটা করিনি। পুকুরের তলদেশও পাকা করিনি। পরিত্যক্ত একটা পুকুরকে সুন্দর রূপ দিয়েছি। দৃষ্টিনন্দন হিসেবে নগরবাসীর কাছে গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠেছে বছর চারেক আগে হারিয়ে যাওয়া ধোপাদীঘি।
উপদেষ্টা খালেদুল ইসলাম কোহিনুর
আইন বিষয়ক উপদেষ্টাঃ এড. মোঃ রফিক আহমদ
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি : মোহাম্মদ হানিফ
সম্পাদক ও প্রকাশক : বীথি রানী কর
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : ফয়সাল আহমদ
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : মো: কামরুল হাসান
নিউজ ইনচার্জ : সুনির্মল সেন
অফিস : রংমহল টাওয়ার (৪র্থ তলা),
বন্দর বাজার, সিলেট।
মোবাইল : ০১৭১৬-৯৭০৬৯৮
E-mail: surmamail1@gmail.com
Copyright-2015
Design and developed by ওয়েব হোম বিডি