বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সিলেটের ১১টি থানায় চেয়ার সংরক্ষন

প্রকাশিত: ৯:৪৯ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৩, ২০২২

বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সিলেটের ১১টি থানায় চেয়ার সংরক্ষন

নিজস্ব সংবাদদাতা :
জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের সম্মাণে সিলেট জেলার ১১টি থানায় আসন সংরক্ষনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সোমবার (০৩ জানুয়ারি) পৃথক পৃথক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে এই সংরক্ষিত আসন কার্যক্রমে শুভসূচনা করে সিলেট জেলা পুলিশ।

 

একাত্তর বাংলাদেশ ও বাঙালীর সৌর্যবির্যের অসাধারণ এক দৃষ্টান্ত। বিশ্ব অবাক হয়ে তখন দেখেছিল, অন্যতম একটা আধুনিক সেনাবাহিনীর তারচেয়েও আধুনিক সমরাস্ত্র নিয়ে হায়েনার মতো ঝাঁপিয়ে পড়া খানসেনাদের বিরুদ্ধে প্রায় নিরস্ত্র ভুখানাঙা মানুষের পাহাড়সম প্রতিরোধ যুদ্ধের দৃশ্য।

 

শুধুই কি প্রতিরোধ? না। চোরাগোপ্তা হামলার মধ্যদিয়ে একের পর এক হায়েনা ঘাঁটির পতন ঘটিয়েছিলেন বাংলার অকুতোভয় দামাল ছেলেরা। তারা সবাই ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা।

জীবনের মায়া ত্যাগ করে হাতের মুঠোয় প্রাণ নিয়ে তারা লড়াই করেছেন এবং মাত্র ৯ মাসের মাথায় প্রায় ৯৩ হাজার সেনা নিয়ে ঢাকায় আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়েছিলেন পাক ক্যাপ্টেন জেনারেল নিয়াজী।

 

এমন অসাধারণ কৃতিত্বের অধিকারী বাংলার দেশপ্রেমিক মুক্তিযোদ্ধাদের কাজের মূল্যায়ন হচ্ছে এখন। সরকার এবং বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা বা সংগঠনের উদ্যোগে তাদের নানাভাবে সম্মাণ জানানো হচ্ছে।

 

তবে এক্ষেত্রে সিলেট জেলা পুলিশের ভূমিকা দারুণ প্রশংসিত হচ্ছে সর্বত্র। পুলিশ সুপার কার্যালয়ের পাশাপাশি সিলেটের ১১টি থানায় একাত্তরের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বিশেষ চেয়ার রাখা হয়েছে।

 

‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’ লেখা বিশেষায়ীত এই চেয়ারে আইনী সহায়তাসহ অন্যান্য কাজে থানায় যাওয়া বীর মুক্তিযোদ্ধারা আসন গ্রহণ করবেন- এমন একটা চিন্তাভাবনা থেকে এই উদ্যোগ বলেই জানিয়েছে সিলেট জেলা পুলিশ সূত্র।

 

জেলা পুলিশের গোলাপগঞ্জ, বিয়ানীবাজার, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট, জকিগঞ্জ, কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, বালাগঞ্জ, ওসমানীনগর, ফেঞ্চুগঞ্জ ও বিশ্বনাথ থানায় সোমবার মুক্তিযোদ্ধাদের উপস্থিতিতে এই বিশেষ চেয়ার সংরক্ষণ কার্যক্রমের শুভসূচনা করা হয়েছে।

 

বিষয়টি নিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা যেমন উচ্ছসিত, তেমনি সাধারণ মানুষও খুশি। তারা এমন উদ্যোগের জন্য সিলেট জেলা পুলিশের পুলিশ সুপার (এসপি) ফরিদ উদ্দিনকে ব্যাপক প্রশংসায় ভাসিয়ে দিচ্ছেন।

 

তাদের মতে, এসপি ফরিদ উদ্দিনের মতো দেশের সবগুলো জেলা ও মেট্রোপলিটন এলাকায় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাণে এভাবে চেয়ার সংরক্ষণ করার উদ্যোগ বাস্তবায়ন হোক। যারা প্রাণ হাতে নিয়ে দেশের জন্য লড়াই করেছেন, বন্দুক মেশিনগান বা স্টেনগানের সামনে বুক পেতে দিয়েছেন হাসতে হাসতে- তাদের সম্মাণ জানালে জাতি সম্মাণিত হবে। এক্ষেত্রে সিলেটের পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিন দেশের অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তাদের জন্য আদর্শ উদাহরণ হয়ে থাকবেন।

 

এ ব্যাপারে জৈন্তাপুর উপজেলা মুকিযোদ্ধা সংসদের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার যাদবময় বিশ্বাস বলেন, জেলা পুলিশের এই উদ্যোগ অকল্পনীয়। আমরা দারুণ সম্মানিত বোধ করছি। এজন্য তিনি পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিনকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।

 

জৈন্তাপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গোলাম দস্তগীর আহমেদ বলেন, মুক্তিযোদ্ধোদের সম্মানে পুলিশ সুপারের নির্দেশে প্রতিটি থানায় স্থায়ী আসন সংরক্ষনের ব্যবস্থা করতে পারায় আমি আনন্দিত এবং গর্বিত। একই ধরনের অনুভুতি ব্যাক্ত করেছেন সিলেটের অন্যান্য থানার সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলরা।

 

এ ব্যাপারে আলাপকালে সিলেট জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ( গণমাধ্যম ) লুৎফুর রহমান বলেন, দেশের মধ্যে সিলেট জেলা পুলিশই এই কার্যক্রম বাস্তবায়ন করেছে। জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের সম্মাণ জানাতে পেরে আমরাও আনন্দিত এবং গর্বিত।

 

উল্লেখ্য, ১১টি থানার পাশাপাশি সিলেটের পুলিশ সুপারের কার্যালয়েও মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সংরক্ষিত আসন রাখা হয়েছে।


সংবাদটি শেয়ার করুন
  •  

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

লাইক দিয়ে পাশে থাকুন

রাফি গার্ডেন সুপার হোস্টেল।

 

আমাদের ভিজিটর
Flag Counter

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com