ভারি বর্ষণে পাহাড় ধস: নিহত ৮, শতাধিক গ্রাম প্লাবিত

প্রকাশিত: ৬:১৭ অপরাহ্ণ, জুলাই ২৭, ২০২১

ভারি বর্ষণে পাহাড় ধস: নিহত ৮, শতাধিক গ্রাম প্লাবিত

সুরমা মেইল ডেস্ক : ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে কক্সবাজারে শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পাহাড় ধস ও পানিতে ডুবে মহেশখালী, উখিয়া ও টেকনাফে রোহিঙ্গাসহ আটজনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া জেলায় সহস্রাধিক বসতবাড়ি পানিতে তলিয়ে গেছে।

 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চকরিয়া ও পেকুয়া উপজেলার মগনামা, রাজাখালী, টৈটং, উজানটিয়া, সিলখালী,চকরিয়ার পহরচাদা, কৈয়ারবিল, হারবাং, বরইতলী, পশ্চিম বড় ভেওলা, বদরখালী, খুটাখালী, ফাসিয়াখালী, শাহারবিল, কাকারা ও সুরাজপুর-মানিকপুর বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। মহেশখালীতে পাহাড় ধসে পড়েছে। পাহাড়ি ঢলে সাঁকো ও দোকান ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে। মহেশখালীর কালারমারছড়া, হোয়ানক, ছোট মহেশখালী ও বড় মহেশখালীতে ২১টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

 

আরও পড়ুন : রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাহাড় ধসে ৬ জনের মৃত্যু

 

আরো জানা গেছে, নবগঠিত ঈদগাঁও উপজেলার ইসলামপুর, জালালাবাদ ইউনিয়নের ১১টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। কক্সবাজার সদরের পিএমখালী, ঝিলংজা, খুরুস্কুল ও চৌফলদন্ডী এলাকা প্লাবিত হয়েছে। রামুর ফতেখাঁরকুল, চাকমারকুল, দক্ষিণ মিঠাছড়ি, কচ্চপিয়া, গর্জনিয়া ও খুনিয়াপালং ইউনিয়নের অর্ধশতাধিক গ্রাম পানিতে তলিয়ে গেছে। উখিয়া ও টেকনাফের ১৫টি গ্রাম পাহাড়ি ঢলে নিমজ্জিত হয়েছে। ভেসে গেছে মিয়ানমার সীমান্তের জিরো লাইনে থাকা রোহিঙ্গাদের মালামাল।

 

সোমবার থেকে মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত অতিবৃষ্টির কারণে বিভিন্ন পাহাড়ি এলাকায় ধস নেমেছে। মহেশখালীর শাপলাপুরে পাহাড় ধসে প্রধান সড়কের উপর প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হওয়ায় সদরের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এদিকে ছোট মহেশখালীর লম্বাঘোনায় ভাঙা ব্রিজের পাশে নির্মিত কাঠের অস্থায়ী সাঁকো প্রবল ঢলে তলিয়ে যাওয়ায় সেখানকার বাসিন্দারা আটকা পড়েছে। কেরুনতলী বাজারে অতি পাহাড়ি ঢলে প্রায় ৪০টি দোকান ভেঙে পড়েছে, ঢলের পানিতে নিমজ্জিত হয়ে আছে ওই গ্রামের প্রায় ৩০০টি ঘর।

 

এদিকে পাহাড় ধসে মহেশখালীতে একজন, উখিয়াতে পাঁচজন এবং টেকনাফে একজন নিহত হয়েছেন। এছাড়া উখিয়ায় পানিতে ঢুবে একজনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতরা হলেন- ছোট মহেশখালীর উত্তর সিপাহীর পাড়ার আনচারের মেয়ে হালিমা খাতুন, উখিয়ার বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্প-১০ এর বাসিন্দা শাহ আলমের স্ত্রী দিল বাহার, ছেলে শফিউল আলম, মেয়ে নূর ফাতেমা, ইউসুফের স্ত্রী দিলবাহার, ছেলে আব্দুর রহমান, মেয়ে আয়েশা সিদ্দিকা, টেকনাফের রকিম আলী।

 

কক্সবাজার শরনার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. সামসুদ্দৌজা নয়ন জানান, ভারী বর্ষণে ১০ নম্বর রোহিঙ্গা শিবিরের পাঁচজন পাহাড় ধসে ও একজন পানিতে ডুবে মারা গেছেন। আহত হয়েছেন ১০-১২ জন। তাদের স্থানীয় হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

 

কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ জানান, সোমবার থেকে পাহাড়ি এলাকা ও নিম্নাঞ্চলে বসবাসকারীদের পাহাড় থেকে নেমে নিরাপদ আশ্রয়স্থল ও সাইক্লোন শেল্টারে আশ্রয় নিতে অনুরোধ করে মাইকিং করা হয়েছে। কিছু পরিবারকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়েছে। অনেকেই এখনো পাহাড়ের উপর ও ঢালুতে ঝুকি নিয়ে বসবাস করছে। ফলে পাহাড় ধস ও পানিতে ঢুবে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। ক্ষতিগ্রস্তদের সরকারিভাবে সহযোগিতা করা হবে।

 

কক্সবাজার পৌরসভাসহ প্রত্যন্ত অঞ্চলে ১০ লাখের অধিক লোক পাহাড়ের উঁচু-নিচু ঢালে ঝুকি নিয়ে বসবাস করছে। বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে প্রাণহানি ও সম্পদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলেও জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক।

 

সংবাদটি শেয়ার করুন
  •  

লাইক দিয়ে পাশে থাকুন

রাফি গার্ডেন সুপার হোস্টেল।

 

আমাদের ভিজিটর
Flag Counter

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com