সিলেট নগরীর ফুটপাতে প্রস্রাব করলেই ‘মেডেল’!

প্রকাশিত: ৩:৩৬ পূর্বাহ্ণ, জানুয়ারি ১, ২০২০

সিলেট নগরীর ফুটপাতে প্রস্রাব করলেই ‘মেডেল’!

নিজস্ব প্রতিবেদক : পথচারী ও সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে একদল তরুণ-তরুণী সিলেটে কিনব্রিজের নিচের পূর্ব দিকের সড়ক ও ফুটপাতে প্রস্রাব করলেই মেডেল পরিয়ে দেওয়া হয়েছে। পথচারী ও সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে এই কর্মসূচি পালন ককেছেন তারা। নগরের স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিত করতে এমন কর্মসূচি তাঁরা ভবিষ্যতেও অব্যাহত রাখবেন।

 

মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) দিনব্যাপী সচেতনতামূলক এই কর্মসূচি পালন করেছেন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বিডি ক্লিন সিলেটের সদস্যরা। তাঁরা বলেন, দিনভর কিনব্রিজ এলাকার রাস্তা ও ফুটপাতে অবস্থান নিয়ে প্রস্রাব করতে আসা ১৮ জনকে সচেতন করতে পেরেছেন।

 

স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, কেউ চুপিসারে সড়ক ও ফুটপাতে প্রস্রাব করলে অথবা প্রস্রাব করার প্রস্তুতি নিলে তাঁকে ঘিরে ধরছেন তরুণ-তরুণীরা। এরপর ব্যঙ্গ করে তাঁরা গলায় পরিয়ে দিয়েছেন মেডেল। তবে কেউ এই মেডেল নেননি।

 

‘যত্রতত্র করলে হিসু, সবাই তোমায় বলবে শিশু’-এই স্লোগান নিয়ে সংগঠনটি প্রথমবারের মতো এমন কর্মসূচি পালন করেছে। ২০ জন তরুণ-তরুণী এই কর্মসূচি বাস্তবায়নে অংশ নেন।

 

সংগঠনটির উপদেষ্টা সামছি আরা আক্তার ফারমিছ বলেন, যত্রতত্র প্রস্রাব করা যেন চিরায়ত একটা নিয়ম হয়ে গেছে। গুরুত্বপূর্ণ ও জনবহুল স্থান হওয়া সত্ত্বেও কিনব্রিজ এলাকায় অনেকেই প্রকাশ্যে প্রস্রাব করতে আসছেন। এতে এলাকার পরিবেশ বিনষ্ট হওয়ার পাশাপাশি নগরের সৌন্দর্যও ব্যাহত হচ্ছে। যেসব কর্তৃপক্ষের এসব দেখার কথা, তারাও সেসব দেখছে না। তাই প্রস্রাব করতে আসা ব্যক্তিদের মেডেল দিয়ে সচেতনতা কর্মসূচি পালন করা হয়।

 

আবদুর রহিম নামের চল্লিশোর্ধ্ব এক ব্যক্তি ফুটপাতে প্রস্রাব করতে গেলে তরুণ-তরুণীরা তাঁকে ঘিরে ধরেন। এ সময় তিনি বলেন, উন্মুক্ত স্থানে প্রস্রাব করা অনুচিত কাজ, এটা ঠিক। কিন্তু এখানে তো বিকল্পও নেই। কোনো পাবলিক টয়লেট নেই। সিটি করপোরেশনের এই এলাকায় একটি গণশৌচাগার স্থাপন করা প্রয়োজন। পথচারীদের জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেওয়া হলে যত্রতত্র প্রস্রাব করা বন্ধ হবে।

 

একই রকম মন্তব্য করেন আরও অন্তত পাঁচজন পথচারী। তাঁরা জানিয়েছেন, গণশৌচাগার না থাকার কারণেই কিনব্রিজ এলাকার মতো নগরের একটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকার যেখানে-সেখানে মানুষ প্রাকৃতিক কাজ সারছে।

 

সংগঠনটির সিলেটের সমন্বয়ক জাকারিয়া আহমেদ বলেন, সারা দেশেই তাঁদের সংগঠনের কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে থাকে। ২০১৬ সালের ৩ জুন কেন্দ্রীয়ভাবে সংগঠনটি প্রতিষ্ঠিত হয়। সিলেটে এর কার্যক্রম শুরু হয় ২০১৭ সালের ২ অক্টোবর। সিলেটে ১২০ জন সক্রিয় সদস্য রয়েছেন। শিক্ষার্থী, তরুণ উদ্যোক্তা থেকে নানা পেশার মানুষ এতে সম্পৃক্ত রয়েছেন। পরিচ্ছন্ন বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্যই তাঁদের সংগঠনের পক্ষ থেকে দেশব্যাপী এ কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে।

 

বিডি ক্লিন সিলেট বিভাগের সমন্বয়কারী যুবায়ের সাইফুল্লাহ বলেন, সচেতনতা কার্যক্রম চালানোর সময় আমরা চার ধরনের অফারের কথা প্রস্রাব করতে আসা ব্যক্তিদের জানিয়েছিলাম। কিন্তু সবাই এসব অফার গ্রহণ করতে অস্বীকার করে ভবিষ্যতে এমনটা করবেন না বলেও কথা দেন। আমরা মূলত; ব্যঙ্গ-বিদ্রূপের ভেতর দিয়ে সামাজিক সচেতনতা চালাতে চেয়েছি। এ কর্মসূচির কারণে অনেকেই সচেতন হয়েছেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন
  •  

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

লাইক দিয়ে পাশে থাকুন

রাফি গার্ডেন সুপার হোস্টেল।

 

আমাদের ভিজিটর
Flag Counter

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com