স্বাস্থ্যখাতের সক্ষমতা বৃদ্ধি: বর্তমান অবস্থা, চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায় শীর্ষক সেমিনার

প্রকাশিত: ১২:৫০ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২১

স্বাস্থ্যখাতের সক্ষমতা বৃদ্ধি: বর্তমান অবস্থা, চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায় শীর্ষক সেমিনার

সিলেট : স্বাস্থ্যখাতের আরো সক্ষমতা বৃদ্ধি, স্বাস্থ্যসেবা প্রান্তিক, সুবিধাবঞ্চিত মানুষসহ সকলের জন্য সহজলভ্য করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ এনজিও’স নেটওয়ার্ক ফর রেডিও এন্ড কমিউনিকেশন (বিএনএনআরসি) এর উদ্যোগে ও দি এশিয়া ফাউন্ডেশনের সহায়তায় বুধবার (২২ সেপ্টেম্বর) অনুষ্ঠিত হলো “স্বাস্থ্যখাতের সক্ষমতা বৃদ্ধি: বর্তমান অবস্থা, চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়” শীর্ষক বহুমাত্রিক অংশীজনদের নিয়ে আয়োজিত সেমিনার।

 

সিলেট নগরীর হোটেল নির্বানা ইন’র সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত উক্ত সেমিনারে নির্বাচিত প্রতিনিধি, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, সরকারী কর্মকর্তা, দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রতিনিধি, রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিক-শিক্ষক, বিভিন্ন পেশার প্রতিনিধিবৃন্দসহ মোট প্রায় ৪০জন অংশগ্রহণকারী উপস্থিত ছিলেন।

 

উক্ত সেমিনারের উদ্দেশ্য ছিলো স্বাস্থ্যখাতের সক্ষমতা আরো বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন পর্যায়ের অংশীজনদের নিয়ে স্বাস্থ্যখাতের বর্তমান অবস্থা, চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায় নিয়ে আলোচনা করে স্বাস্থ্যসেবাকে কীভাবে আরো সহজলভ্য করা যায়, সে বিষয়গুলো বিবেচনা করা।

 

সেমিনারের শুরুতে সিলটিভির প্রধান নির্বাহী ও সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি জনাব আল আজাদ সেমিনারে উপস্থিত সকলকে স্বাগত জানান এবং তিনি সেমিনারের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে আলোচনা করেন। ফৌজিয়া আক্তার, সেমিনারটি সঞ্চালনা করেন। সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও জাগোনিউজ২৪ডটকম এর নিজস্ব প্রতিবেদক, জনাব ছামির মাহমুদ সেমিনারে সিলেটের স্বাস্থ্যখাতের সক্ষমতা বৃদ্ধি, বর্তমান অবস্থা, চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায় শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনার পরে অংশগ্রহণকারীরা মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন এবং তাঁদের বিভিন্ন মতামত ও পরামর্শ তুলে ধরেন।

 

সিলেট প্রাইভেট হাসপাতাল ও ডায়াগোনস্টিক সেন্টার মালিক সমিতির সভাপতি জনাব ডা. নাসিম আহমেদ বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বলেন, কোভিড-১৯ মহামারির সময়ে আমাদের অনেক সমস্যার সম্মুখিন হতে হয়েছে। হঠাৎ করে কোডিড-১৯ এর সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় সংক্রমিত রোগীদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা করার জন্য অবকাঠামোগত সমস্যায় পড়তে হয়েছে। তবে ঝুঁকির মধ্যে থেকেও আমরা কোভিড-১৯ মোকাবেলায় অনেক সফল হয়েছি।

 

দুর্নীতি দমন কমিশনের সিলেট কার্যালয় এর সহকারী পরিচালক জনাব মো. আনোয়ার হোসেন বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বলেন, আর্থিক ও স্বাস্থ্যখতসহ দেশের সরকারী ও বেসরকারী সকল খাতকে দুর্নীতিমুক্ত করার লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করছে দুর্নীতি দমন কমিশন। তবে এক্ষত্রে সবার আন্তরিক সহযোগতা প্রয়োজন। যে কোনো দুর্নীতির অভিযোগ আসলেই কমিশনের কেন্দ্রীয় ও শাখা অফিসগুলোতে অভিযোগ জানানোর সুযোগ রয়েছে।

 

বিশেষ অতিথি হিসেবে সিলেট বিভাগ-এর পরিচালক, স্বাস্থ্য, জনাব ডা. হিমাংশু লাল রায় উল্লেখ করেন যে কোভিড-১৯ মহামারির সময়ে বাংলাদেশের মৃত্যুহার ছিলো বিশে^ও অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক কম এবং সিলেটের অবস্থা তুলনামূলকভাবে ভালো ছিলো। সব সম্ভব হয়েছে সকলের সহযোগিতায় এবং সরকারের সময়মত সঠিক সিদ্ধান্তের কারণে। তবে স্বাস্থ্যখাতে বাজেট বৃদ্ধি করতে হবে এবং দক্ষ জনবল নিয়োগ দিতে হবে। চিকৎসক, দক্ষ টেকনোলজিস্টসহ জনবল সংকট আছে। এগুলো দূর করতে হবে এবং সবাইকে দুইডোজ টিকা নেয়ার পরও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।

 

সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার জনাব মো. খলিলুর রহমান প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, আজকের এই সেমিনারের স্বাস্থ্য বিষয়ক আলোচিত সমস্যা ও সম্ভাবনার তথ্য ও বক্তব্যগুলো প্রতিবেদন আকারে প্রকাশ পেলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করার সুযোগ থাকবে। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে বাংলাদেশ স্বাস্থ্যখাতে অনেক উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দক্ষ ও দূরদর্শী নেতৃত্বে আমরা কোভিড-১৯ মোকাবেলায় নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। সরকারি স্বাস্থ্যসেবা ও অবকাঠামোর অনেক উন্নয়ন হয়েছে আরো কাজ চলছে, সমস্যা সমাধানে সরকারের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। সবাইকে দুইডোজ টিকা নেবার পরও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।

 

সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের প্রাক্তন সভাপতি ও দৈনিক উত্তরপূর্ব-এর নির্বাহী সম্পাদক জনাব তাপস দাশ পুরকায়স্থ সেমিনারে সভাপতির বক্তব্যে জাতীয় বাজেটে স্বাস্থ্যখাতের বরাদ্দ বাড়াতে হবে পাশাপশি ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী ও টেকনোলজিস্ট এর যে সকল পদ শূন্য আছে অবিলম্বে সে পদ সমুহে দক্ষ জনবল নিয়োগ দেয়ার আহবান জানান।

 

আশা করা হচ্ছে, উক্ত সেমিনারের বক্তব্য এবং মুক্ত আলোচনার ফলে উত্থাপিত বিষয়সমূহ সবার বিশেষ করে সুবিধাবঞ্চিত প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য গুণগত ও মানসম্পন্ন স্বাস্থ্য-সেবা প্রদান নিশ্চিতকরণে সহায়ক ও কার্যকরী ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে।

 

উল্লেখ্য, বিএনএনআরসি একটি গণমাধ্যম উন্নয়ন বিষয়ক সংস্থা যা ২০০০ সালে আত্মপ্রকাশ করে এবং গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীন এনজিও বিষয়ক ব্যুরো থেকে নিবন্ধিত হয়। বিএনএনআরসির কর্মপ্রচেষ্টা হলো বাংলাদেশে গণমাধ্যমের দ্রুত পরিবর্তনশীল বাস্তবতার চ্যালেঞ্জ এবং সুযোগ-সুবিধাসমূহ বিবেচনায় রেখে গণমাধ্যমের জ্ঞানভিত্তিক ও চলমান ইস্যু উভয় বিষয় নিয়ে গণমাধ্যমের উন্নয়ন।

 

বিএনএনআরসি নলেজ-ড্রাইভেন মিডিয়া ডেভেলপমেন্ট-এর ভূমিকায় আঞ্চলিক, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে কাজ করে থাকে। এটি জাতিসংঘের ওয়ার্ল্ড সামিট অন ইনফরমেশন সোসাইটি (ডব্লিউএসআইএস) ও জাতিসংঘের ইকোনোমিক এন্ড সোশ্যাল কাউন্সিল-এর বিশেষ পরামর্শক মর্যাদাপ্রাপ্ত সংস্থা এবং জাতিসংঘের ডব্লিউএসআইএস পুরস্কার- ২০১৬, ২০১৭, ২০১৯, ২০২০ এবং ২০২১ এর বিজয়ী এবং চ্যাম্পিয়ন।

 

সংবাদটি শেয়ার করুন
  •  

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

লাইক দিয়ে পাশে থাকুন

রাফি গার্ডেন সুপার হোস্টেল।

 

আমাদের ভিজিটর
Flag Counter

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com