উড়াল সেতু হচ্ছে সুনামগঞ্জের হাওরে

প্রকাশিত: ২:০০ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ২৩, ২০২১

উড়াল সেতু হচ্ছে সুনামগঞ্জের হাওরে

সুরমা মেইল ডেস্ক : হাওর এলাকায় হচ্ছে ৫টি উড়াল (এলিভেটেড) সড়ক। এ জন্য ‘হাওর এলাকায় উড়াল সড়ক ও ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন’ শীর্ষক একটি প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে। এটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৪৯০ কোটি টাকা।

 

প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে হাওর এলাকার সার্বিক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের মাধ্যমে কৃষি উৎপাদনে এবং উৎপাদিত কৃষিপণ্য বাজারকরণে সহযোগিতা হবে।

 

প্রকল্পের মাধ্যমে হাওর অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য ১১৮ দশমিক ১৩ কিলোমিটার অল সিজন সড়ক, ৩৯ দশমিক ৩৯ কিলোমিটার সাবমার্জিবল সড়ক, হাওড়ের মধ্যে দিয়ে ৫টি ১০ দশমিক ৮১ কিলোমিটার এলিভেটেড সড়ক নির্মাণ এবং বিভিন্ন সড়কে ১৭৫টি ব্রিজ কালভার্ট হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

 

এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় থেকে প্রস্তাব পাওয়ার পর গত বছরের ২৭ জুলাই অনুষ্ঠিত হয় পিইসি (প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি) সভা।

 

ওই সভায় দেওয়া সুপারিশগুলো প্রতিপালন করায় প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে উপস্থাপনের সুপারিশ করা হয়েছে। অনুমোদন পেলে ২০২৫ সালের জুনের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন করবে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি)।

 

প্রকল্প প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে— হাওর অঞ্চলের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা অনুন্নত। এখানে যোগাযোগ ব্যবস্থা মূলত গ্রামীণ ডুবন্ত সড়ক, যা কেবল শুস্ক মৌসুমে ব্যবহার করা যায়। বর্ষা মৌসুমে নৌ-পরিবহনই এখানকার প্রধান যোগাযোগ মাধ্যম। এরূপ অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে কৃষিপণ্য উৎপাদন ও পরিবহন, গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন, কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি, সামাজিক সুবিধাদিও প্রাপ্যতা, বিশেষত-শিক্ষা ও স্বাস্থ্য প্রভৃতি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

 

সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর, ধর্মপাশা, জামালগঞ্জ ও দিরাই উপজেলা এবং ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল, নবীনগর ও নাসিরনগর উপজেলায় প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুত রাস্তাসহ ব্রিজ কালভার্ট নির্মাণের জন্য ২০১৭ সালের ১৩ নভেম্বর একটি সমীক্ষা প্রকল্প অনুমোদিত হয়। সে মোতাবেক হাওর অঞ্চলের জীববৈচিত্র্য ঠিক রেখে টেকসই অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য সেন্টার ফর ইনভায়রনমেন্টাল অ্যান্ড জিওগ্রাফি ইনফরমেশন সার্ভিস (সিইজিআইএস) একবছর ব্যাপী সমীক্ষা কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়।

 

পিইসি সভার সিদ্ধান্ত : প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী প্রকল্প এলাকায় (বারহাট্টা, ধর্মপাশা, জামালগঞ্জ, তাহিরপুর ও বিশ্বম্ভপুর, মোট ৫টি উপজেলা) যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নের জন্য জামালগঞ্জ উপজেলা থেকে ধর্মপাশা উপজেলা ভায়া সাচনা বাজার-সুখাইর-জয়শ্রী বাজার পর্যন্ত সড়ক এবং অন্যান্য রাস্তার সংস্থান রেখে অবশিষ্ট কাজ বাদ দিতে হবে।

 

প্রকল্পের প্রধান কার্যক্রম হচ্ছে ৯৭ দশমিক ৮৬ কিলোমিটার অল সিজন উপজেলা সড়ক, ২০ দশমিক ২৭ কিলোমিটার অল সিজন ইউনিয়ন সড়ক, ১৬ দশমিক ৫৩ কিলোমিটার সাবমার্জিবল উপজেলা সড়ক এবং ২২ দশমিক ৮৬ কিলোমিটার সাবমার্জিবল ইউনিয়ন ও গ্রাম সড়ক নির্মাণ। এ ছাড়া ১০ দশমিক ৮১ কিলোমিটার এলিভেটেড সড়ক এবং ৫ হাজার ৬৮৮ মিটার ব্রিজ কালভার্ট নির্মাণ করা হবে।

 

এ বিষয়ে প্রকল্পটির দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিকল্পনা কমিশনের কৃষি, পানি সম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের সদস্য (সচিব) রমেন্দ্র নাথ বিশ্বাস পরিকল্পনা কমিশনের মতামত দিতে গিয়ে বলেন, ‘এই এলাকায় ভৌত অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে সারাবছর মালামাল পরিবহন, উৎপাদিত কৃষি পণ্য, মৎস্য সম্পদ ইত্যাদি দ্রুত ও সুলভে পরিবহনের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এতে গ্রামীণ অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড গতিশীল হবে।’

 

প্রকল্পটি গ্রামীণ দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে দারিদ্র্য দূরীকরণে অবদান রাখবে। তাই প্রকল্পটি অনুমোদন জন্য সুপারিশ করা হয়েছে।


সংবাদটি শেয়ার করুন
  •  

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

লাইক দিয়ে পাশে থাকুন

রাফি গার্ডেন সুপার হোস্টেল।

 

আমাদের ভিজিটর
Flag Counter

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com