লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে পর্যটকদের উপচেপড়া ভিড়

প্রকাশিত: ১:১৬ পূর্বাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৮, ২০২১

লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে পর্যটকদের উপচেপড়া ভিড়

ছবি : সংগৃহীত


নিজস্ব প্রতিবেদক, মৌলভীবাজার :
৫০ তম বিজয় দিবস বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী আর শুক্র-শনিবার সরকারি ছুটিতে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে পর্যটকদের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। একই সাথে মাধবপুর চা বাগান লেকেও পর্যটকদের উপস্থিতি ছিলে বেশী।

 

বৃহস্পতিবার (১৬ ডিসেম্বর) দুপুর থেকে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানও মাধবপুর লেকে পর্যটকদের সমাগম বাড়তে থাকে।

 

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান ও মাধবপুর চা বাগান লেক। বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের আওতাধীন কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান শুধু প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে অন্যন্য নয়, দেশের সবক’টি বনাঞ্চলের মাঝে সবচেয়ে নান্দনিক ও আকর্ষণীয়। দেশের মিক্ষা গবেষনা, ইকো ট্যুরিজমসহ ভ্রমণ বিলাসীদের চিত্ত বিনোদনের অন্যতম আকষর্ণীয় কেন্দ্র হয়ে উঠেছে লাউয়াছড়া উদ্যান। গভীর অরন্য সমৃদ্ধ অদ্ভুদ এক নির্জন পরিবেশ এখানে।

 

লাউয়াছড়ায় ১৬৭ প্রজাতির বৃক্ষ, ৪ প্রজাতির উভচর প্রানী, ৬ প্রজাতির সরিস্রৃপ. ২৪৬ প্রজাতির পাখি, ২০ প্রজাতির স্তন্যপায়ী রয়েছে এ উদ্যানে। এদের মধ্যে বিরল প্রজাতির উল্লুক, বানর, চশমা পরা বানর, লজ্জাবতী বানর, হনুমান. ধনেশ পাখি, শ্যামা, অজগর, মেছো বাঘ ও মায়া হরিণ উল্লেখযোগ্য।

 

এ উদ্যানে একটি ৩ ঘন্টার, একটি ১ ঘন্টার ও ১টি ৩০ মিনিটের পায়ে হাটার ট্রেইল পথ রয়েছে। ইকো-টু্র গাইডের নিয়ে এসব ট্রেইল পথে পর্যটকরা ঘুরেন। প্রবেশ মূল্য দিয়ে পর্যটকরা এ উদ্যানে প্রবেশ করছেন।

 

ট্রপিক্যাল রেইন ফরেস্ট হিসেবে খ্যাত এ উদ্যান প্রকৃতি প্রেমী দেশী-বিদেশী পর্যটকদের আকর্ষনীয় স্থানে পরিনত হয়েছে। উঁচুনিচু টিলাভূমি দুটি খাসিয়া পুঞ্জি বিরল বিভিন্ন জাতের গাছ গাছালি, নানা জাতের পাখি ও বন্যপ্রাণীর অভয়ারন্য করোনা সংক্রমণের কারনপ প্রায় দেড় বছর পর্যটকদের জন্য প্রবেশাধিকার বন্ধ ছিল। প্রায় মাস খানেক আগে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে পর্যটক প্রবেশ শুরু হলেও ৫০তম বিজয় দিবস বিজয়ের সুবর্ন জয়ন্তী উপলক্ষে ছুটি ও সাথে সাথে শুক্র ও শনিবার সরকারি ছুটি মিলিয়ে গত দুই দিন ধরে লাউয়াছড়া উদ্যানে উপচে পড়া পর্যটক উপস্থিতি ছিল। বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে শুরু করে শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত লাউয়াছড়া উদ্যানের বিভিন্ন পয়েন্টে নারী-পুরুষ ও শিশু কিশোর মিলিয়ে নানা বয়সের পর্যটকের উপস্থিতি দেখা গেছে।

 

শুক্রবার (১৭ ডিসেম্বর) বিকেলে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে ঢাকার নিকুঞ্জ আবাসিক এলাকা থেকে আসা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত পর্যটক জাকির হোসেন ও নার্গিস সুলতানা দম্পতি বলেন. করোনার কারণে ছেলে মেয়ে নিয়ে ঢাকার বাহিরে যাওয়া হয়নি তাই ৩ দিনের টানা ছুটি থাকায় এ সুযোগে সপরিবারে শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জের পর্যটন এলাকাগুলো ঘুরে খুবই ভালো লাগলো।

 

লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের টিকেট কালেক্টর শাহীন মাহমুদ বলেন, গত বৃহস্পতিবার ১৬ ডিসেম্বর লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে ১৮৪৭ জন প্রাপ্ত বয়স্ক ও ২৯৮ জন অপ্রাপ্ত বয়স্ক পর্যটক এসেছেন। এর মাঝে বিদেশী পর্যটক ছিলেন ৮ জন। এসব পর্যটকের প্রবেশ মূল্য ও গাড়ি পার্কিং থেকে ১৬ ডিসেম্বর ১ লাখ ৫ হাজার ৫০০ টাকা রাজস্ব আয় হয়েছে। শুক্রবার ১৭ ডিসেম্বর প্রাপ্ত বয়স্ক পর্যটক আসেন ১৯৯৩ জন। অপ্রাপ্ত বয়স্ক পর্যটক আসেন ২৯৯ জন। এর মাঝে একজন বিদেশী পর্যটক ছিলেন। ১৭ ডিসেম্বর রাজস্ব আয় হয়েছে ১ লাখ ৯ হাজার ১৯০ টাকা।  এ ২ দিনে এর বিপরীত দুই লক্ষ পনেরো হাজার চারশত নব্বই টাকা রাজস্ব আদায় করা হয়। মোট পর্যটক ছিলো ৪,৪৪৬ জন।

 

তিনি আরও বলেন, এ দুদিনে পর্যটকদের বাড়তি চাপ থাকায় টিকেট বিক্রি ও রাজস্ব আদায়ে কিছুটা হিমশিম খেতে হয় তারপরও আমরা পর্যটকদের টিকেত দিতে পেরেছি। উদ্যানের কোথাও কোন ধরনের বিশৃঙ্খলা হয়নি পর্যটকদের সার্বক্ষণিক নিরাপত্তায় নিয়োজিত ছিলেন ট্যুরিষ্ট পুলিশের সদস্যরা।

 

অন্যদিকে মাধবপুর চা বাগান লেকে উপচেপড়া পর্যটক উপস্থিতি থাকলেও একানে প্রবেশ মূল্য না থাকায় পর্যটকদের সংখ্যা ও রাজস্ব আয় নির্নয় করা যায়নি।

 

বন্যপ্রানী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের সিলেট বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. রেজউল করিম চৌধুরী ৩ দিনের ছুটিতে পর্যটকদের উপচেপড়া ভিড় ও রাজস্ব আয়ের সত্যতা নিশ্চিত করেন।

 

তিনি বলেন, বেশী করে পর্যটক আসলে বনের বন্যপ্রাণী দৌড়ে অনেকটা গভীর অরণ্যে চলে যায়। তাছাড়া বনের প্রাকৃতিক নিরবতা থাকে না। তাছাড়া বনে অনেক ধরণেল গুল্ম রয়েছে যা পর্যটকদের পায়ে পিষ্ট হয়ে যায়। অতিরিক্ত পর্যটকের উপস্থিতিতে এ দিকে দৃষ্টি রাখা যায় না।


সংবাদটি শেয়ার করুন
  •  

লাইক দিয়ে পাশে থাকুন

রাফি গার্ডেন সুপার হোস্টেল।

 

আমাদের ভিজিটর
Flag Counter

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com