শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনে শাবির সিন্ডিকেট নির্বাচন স্থগিত

প্রকাশিত: ২:০৫ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৯, ২০২২

শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনে শাবির সিন্ডিকেট নির্বাচন স্থগিত

শাবিপ্রবি প্রতিনিধি :
শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) সিন্ডিকেট নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে। আগামী ২ ফেব্রুয়ারি এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।

 

বুধবার (১৯ জানুয়ারি) সকালে শাবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ গণমাধ্যম কর্মীদের এ কথা জানিয়ে তিনি বলেন, আগামী ২ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। তবে উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে এ নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে।

 

উপাচার্য বলেন, শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রতিনিধিরা গালিগালাজ সহ্য করে আলোচনার প্রস্তাব দিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু শিক্ষার্থীরা তা প্রত্যাখ্যান করছে। এ পরিস্থিতিতে আগামী ২ ফেব্রুয়ারি হতে যাওয়া এ নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে।

 

এদিকে, শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার ঘটনার প্রতিবাদে ও উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে আজও আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।

 

এরমধ্যে উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেছেন সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের নেতারা। গতকাল দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যান সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের নেতারা। সেখানে সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, আমরা আপনাদের মিথ্যা আশ্বাস দেব না। আপনাদের দাবি-দাওয়া যাতে আদায় হয় সেই লক্ষে আমরা পাশে থাকব। আহতদের হাসপাতালের বেডে আমরা দেখে এসেছি। শিক্ষার্থীদের দাবি-দাওয়ার সঙ্গে আমরা দলীয় ও ব্যক্তিগত ভাবে একাত্মতা পোষণ করছি।

 

এদিকে, গত রোববার পুলিশ-শিক্ষার্থী সংঘর্ষের ঘটনায় দুই থেকে ৩০০ অজ্ঞাত শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশ। মামলার এজাহারে লেখা হয়েছে- আন্দোলনরত ২-৩শ উচ্ছৃঙ্খল শিক্ষার্থী হঠাৎ কর্তব্যরত পুলিশের ওপর চড়াও হয়। তারা সরকারি আগ্নেয়াস্ত্র ধরে টানাটাানি করে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। চারদিক থেকে বৃষ্টির মতো ইটপাটকেল নিক্ষেপসহ আগ্নেয়াস্ত্র থেকে গুলি ছোড়ে। এছাড়া পুলিশের ওপর ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ক্যাম্পাসে আতঙ্ক সৃষ্টি করে।

 

শিক্ষার্থীদের আন্দোলন শুরু হয় বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে। তখন শিক্ষার্থীদের অভিযোগ ছিল, হলে নানা সমস্যা রয়েছে। এসব সমস্যার সমাধান চেয়ে তারা বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী ছাত্রীহলের প্রভোস্ট সহযোগী অধ্যাপক জাফরিন আহমেদকে কল করেন। প্রভোস্টকে ফোন দিলে তিনি বলেন, ‘বের হয়ে গেলে যাও, কোথায় যাবে? আমার ঠেকা পড়েনি।’ শিক্ষার্থীরা বিষয়টি জরুরি উল্লেখ করলে তিনি বলেন, ‘কীসের জরুরি? কেউ তো আর মারা যায়নি।’

শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনে শাবির সিন্ডিকেট নির্বাচন স্থগিত

পরে প্রভোস্টের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলন করেন তারা। এরইমধ্যে রোববার (১৬ জানুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি (আইআইসিটি) ভবনের সামনে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়।  এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন। তার আগে বিকেলে তিন দফা দাবি মেনে না নেওয়ায় উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইআইসিটি ভবনে অবরুদ্ধ করেন শিক্ষার্থীরা। উপাচার্যকে পুলিশ উদ্ধার করতে গেলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ওই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

 

এরপর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেয়। তবে ওই নির্দেশনা অমান্য করে আন্দোলন চালিয়ে যান শিক্ষার্থীরা। প্রভোস্টের পদত্যাগের দাবিতে শুরু হওয়া আন্দোলন শেষ পর্যন্ত উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে পরিণত হয়।


।আরও পড়ুন

সংবাদটি শেয়ার করুন
  •  

লাইক দিয়ে পাশে থাকুন

রাফি গার্ডেন সুপার হোস্টেল।

 

আমাদের ভিজিটর
Flag Counter

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com